এখনো গোপন আঁধারের তলে আলোকের শতদল, মেঘে মেঘে লেগে বরণে বরণে করিতেছে টলমল। সখালী পাতাও সখাদের সাথে, বিনামূলে দাও প্রাণ, এপারে মোদের মথুরার মত নাই দান-প্রতিদান। রঙের কুহেলী তলে, তোমার জীবন ঊষার আকাশে শিশু রবি সম জ্বলে। বিহগ ছাড়িয়া ভোরের ভজন আহারের সন্ধ্যানে, বাতাসে বাঁধিয়া পাখা-সেতু-বাঁধ ছুটিবে সুদুর-পানে। মাধবীলতার দোলনা বাঁধিয়া কদম্ব-শাখে শাখে, কিশোর! তোমার কিশোর সখারা তোমারে যে ওই ডাকে।
ওপারে কিশোর, এপারে যুবক, রাজার দেউল বাড়ি, পাষাণের দেশে কেন এলে ভাই। রাখালের দেশ ছাড়ি? আজিও চেননি সোনার আদর, চেননি মুক্তাহার, হাসি মুখে তাই সোনা ঝরে পড়ে তোমাদের যারতার। হেথা যৌবন মেলিয়া ধরিয়া জমা-খরচের খাতা, লাভ লেকাসান নিতেছে বুঝিয়া খুলিয়া পাতায় পাতা। কারে ভালবাস, কারে যে বাস না তোমরা শেখনি তাহা, আমাদের মত কামনার ফাঁদে চেননি উহু ও আহা! মোদের মথুরা টরমল করে পাপ-লালসার ভারে, ভোগের সমিধ জ্বালিয়া আমরা পুড়িতেছি বারে বারে।
এখনো আসেনি অলি, মধুর লোভেতে কোমল কুসুম দুপায়েতে দলি দলি। এখন হইবে লোক জানাজানি, মুখ চেনাচেনি আর, হিসাব নিকাশ হইবে এখন কতটুকু আছে কার। আজিও নিজেরে বিকাইতে পার ফুলের মালার দামে, রূপকথা শুনি তোমাদের দেশে রূপকথা-দেয়া নামে। এখনো পাখিরা উঠেনি জাগিয়া, শিশির রয়েছে ঘুমে, কলঙ্কী চাঁদ পশ্চিমে হেলি কৌমুদী-লতা চুমে। সেই ব্রজধূলি আজো ত মুছেনি তোমার সোনার গায়, কেন তবে ভাই, চরণ বাড়ালে যৌবন মথুরায়!
কারে ভালবাস, কারে যে বাস না তোমরা শেখনি তাহা, আমাদের মত কামনার ফাঁদে চেননি উহু ও আহা! সেই ব্রজধূলি আজো ত মুছেনি তোমার সোনার গায়, কেন তবে ভাই, চরণ বাড়ালে যৌবন মথুরায়! হায়রে কিশোর হায়! ফুলের পরাণ বিকাতে এসেছ এই পাপ-মথুরায়। এখনো গোপন আঁধারের তলে আলোকের শতদল, মেঘে মেঘে লেগে বরণে বরণে করিতেছে টলমল। তুমি ভাই সেই ব্রজের রাখাল, পাতার মুকুট পরি, তোমাদের রাজা আজো নাকি খেলে গেঁয়ো মাঠখানি ভরি।
শূন্য হাওয়ার শূন্য ভরিতে বুকখানি করি শুনো, ফুলের দেউল হবে না উজাড় আজিকে প্রভাতে পুন। হয়ত তাহারি অলকে বাঁধিতে মাঠের কুসুম ফুল, কতদূর পথ ঘুরিয়া মরিছ কত পথ করি ভুল। মাধবীলতার দোলনা বাঁধিয়া কদম্ব-শাখে শাখে, কিশোর! তোমার কিশোর সখারা তোমারে যে ওই ডাকে। হেথা যৌবন মেলিয়া ধরিয়া জমা-খরচের খাতা, লাভ লেকাসান নিতেছে বুঝিয়া খুলিয়া পাতায় পাতা। কে এলে তবে ভাই, সোনার গোকুল আঁধার করিয়া এই মথুরার ঠাই।